সড়ক দুর্ঘটনা কী? সাধারণত সড়ক দুর্ঘটনায় গাড়ীর মুখোমুখি সংঘর্ষ, অগ্নিকাণ্ড ইত্যাদি সাধারণ দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এ জাতীয় দুর্ঘটনাগুলো সরেজমিনে তদন্তপূর্বক চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে ভবিষ্যতে এড়িয়ে যাওয়া যায় যা ‘তৃণমূল পর্যায়ে কারণ চিহ্নিত বিশ্লেষণ’ নামে পরিচিত। কিন্তু সচরাচর তা ব্যাপক আকারে ও অদৃষ্টবাদজনিত কারণে প্রতিপালিত হয় না। তৃণমূল পর্যায়ের কারণগুলো একই ধরনের নয় এবং পুরোটাই চক্রাকারে দুর্ঘটনা আকারে ফিরে আসে যা কখনোই চিহ্নিত করা সম্ভবপর হয়ে উঠে না। এরফলে ভবিষ্যতে এটি একই ধরনের দুর্ঘটনার পুণরাবৃত্তি নয় বিধায় তা ‘আকস্মিক ঘটনা’ হিসেবেই রয়ে যায়।
সড়ক দুর্ঘটনা রিপোর্ট
সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন ২০২২ থেকে জানা যায়, ২০২১ সালে ৫ হাজার ৬২৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৭ হাজার ৮০৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯ জন। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য বছরটিতে ৮৫ দিন গণপরিবহন বন্ধ ছিলো। ২০২১ সালে সড়ক পথের পাশাপাশি রেলপথে ৪০২টি দুর্ঘটনায় ৩৯৬ জন নিহত, আহত ১৩৪ জন। নৌ-পথে ১৮২টি দুর্ঘটনায় ৩১১জন নিহত, আহত ৫৭৮ জন এবং ৫৪৪ জন নিখোঁজ হয়েছেন। সড়ক, রেল, নৌ-পথে মোট ৬ হাজার ২১৩টি দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫১৬ জন নিহত ও ৯ হাজার ৭৫১ জন আহত হয়েছেন। এর আগের বছর ৪ হাজার ৮৯১টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ৬৮৬ জন। আর আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৬০০ জন।
জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রসমূহে প্রচারিত সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এসব দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন তাদের মধ্যে ২ হাজার ৩৫০ জন চালক, ১ হাজার ৭১৫ জন পথচারী, ১ হাজার ১৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী, ১১১ জন শিক্ষক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২৩৭ জন সদস্য, ১ হাজার ৭৬ জন নারী, ৬৩৮ জন শিশু, ৪২ জন সাংবাদিক, ২৭ জন চিকিৎসক, ১৪ জন আইনজীবী, ১৮ জন প্রকৌশলী, ১৬১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও ১০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। প্রাকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এসব দুর্ঘটনায় বার্ষিক ক্ষয়ক্ষতি জিডিপির প্রায় ১.৫ শতাংশ। এসব হতাহতদের ৭৮.৩৯ শতাংশ ১৫ থেকে ৪৫ বছরের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত যানবাহনের ০.৭৯ শতাংশ মোটরসাইকেলে, ০.৭৬ শতাংশ কার-জিপ মাইক্রোবাসে ০.২১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেলেও করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে ৮৫ দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ২.৩৬ শতাংশ বাস দুর্ঘটনা, ১ শতাংশ নসিমন-মাহিন্দ্রা-লেগুনা দুর্ঘটনা, ০.৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক দুর্ঘটনা কমেছে।
বাইক রাইডিংএ নিজের দক্ষতার লেভেল চিনতে পারার লক্ষণঃ
আলোচনা করবো বাইক রাইডিং এ যে অভ্যাসগুলো জানান দেয় আপনার নিজের দক্ষতা উন্নতি হচ্ছে বা মোটামুটি দক্ষতার উপরে চলে গেছেন।
১। আপনি কি বাইকের গতি কমানোর জন্য ক্লাচের আগে ইঞ্জিন ব্রেক এবং ফিজিক্যাল ব্রেক ব্যবহার করে থাকেন?
২। আপনি কি যেকোন রাস্তায় ক্লাচ লিভার আর ব্রেক লিভারে হাতের আঙ্গুল না রেখেই নিশ্চিন্তে যেকোন গতিতেই বাইক রাইড করতে পারেন?
৩। আপনি কি যে কোন গতিতে থাকা বাইককে সর্বোচ্চ ৩/৪ সেকেন্ডের মধ্যেই তার গতি অর্ধেকের নিচে নামিয়ে আনতে পারেন?
৪। আপনি কি মিডিয়াম লং বেন্ডে ১৩০ ডিগ্রী বা কাছাকাছি কর্ণারে বাইকের গতি ১০/১৫% এর বেশি না কমিয়ে কর্ণারিং কমপ্লিট করতে পারেন?
৫। আপনি কি কর্ণারিং এবং যে কোন অবস্ট্যাকলকে পাস কাটানোর জন্য কাউন্টার স্টিয়ারিং ব্যবহার করতে পারেন?
৬। আপনি কি আপনার বাইকের প্রস্থের চেয়ে উভয়দিকে মোট ১ ফুট গ্যাপের মধ্য দিয়ে বাইক চালিয়ে নিয়ে বের হয়ে যেতে পারেন, অর্থাৎ ক্লোজ কলে বাইককে স্ট্যাবল অবস্থায় নিশ্চিন্তে চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন?
উপরের যেকোন পয়েন্টের উত্তর যদি “না” হয়, তবে আপনাকে আরো দক্ষ হতে হবে নয়তো যেকোন মুহুর্তে কোন দুর্ঘটনার সম্মুখিন হলে সেখান থেকে অক্ষতভাবে বেরিয়ে যেতে পারবেন না।
উপরের সবগুলোর উত্তর যদি “হ্যাঁ” হয়, তবে আপনার রাইডিং দক্ষতার লেভেল মোটামুটির উপরে উঠে গেছে, এখন আপনার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বা সিক্স সেন্সের প্রয়োগ সঠিক মাত্রায় করতে পারলে জীবনে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা খুবই কম হতে পারে বা ক্ষয়ক্ষতির পরামাণ খুবই কম হতে পারে।
বাইক চলাকালে একজন রাইডারকে উপরের সবগুলো পরিস্থিতির সাথেই সম্মুখিন হতে হয়, নিজের দক্ষতা উন্নত করেন এবং নিজেকে সেইফ রাখেন।