গাড়ি নিজে নিজেও চালানো শেখা যায় আবার ট্রেইনিং সেন্টারের মাধ্যমে ও গাড়ি চালানো শেখা যায়। এই পোস্টে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
গাড়ি চালানো শেখার জন্য আপনি যে কাজটি করতে পারেন তা হলো নিকটস্থ ভালো কোনো ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সেন্টারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ঢাকাতে ড্রাইভিং শেখার জন্য ৫০০+ ট্রেইনিং সেন্টার বা স্কুল রয়েছে এবং বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি বিআরটিও এর অনুমোদিত ৭৭ টি ট্রেইনিং সেন্টার রয়েছে বাংলাদেশে। এসব সেন্টারে আপনি জয়েন হয়ে এক্সপার্ট প্রশিক্ষক দ্বারা গাড়ি চালানো শিখতে পারেন। সকালে ৩০ মিনিট এবং বিকালে ৩০ মিনিট এভাবে আপনাকে গাড়ি চালানো শিখাবে।
এসব ট্রেইনিং সেন্টারে ভর্তি হতে ৫ – ৯ হাজার টাকা লাগতে পারে। আপনার যদি প্রযাপ্ত পরিমানে মানি থাকে তাহলে কোনো ভালো ড্রাইভিং ট্রেইনিং সেন্টারের মাধ্যেমেই গাড়ি চালানো শেখা ভালো, কারন যারা আপনাকে শেখাবে তারা সবাই ১০ থেকে ১৫ বছরের অভিঙ্গতা সম্পুর্ন ড্রাইভার।
ভালো ড্রাইভিং সেন্টারের ঠিকানাঃ
বিটিআরটিসি ড্রাইভিং ট্রেইনিং সেন্টার।
অথবা আপনার কাছে যদি টাকা না থাকে তাহলে আপনি নিজ চেষ্টায় ও শিখতে পারেন।
আমি মনে করি গাড়ি চালানোর জন্য সবচেয়ে যেটির বেশী প্রয়োজন তা হলো সাহস, আপনার মধ্যে যদি সাহস নামক শক্তিশালী উপাদান টি থাকে তাহলে আপনি আপনার হাতে থাকা স্মাটফোনটি দিয়ে গুগল করে ও ইউটিউবিং করে অটো গাড়ি কিভাবে চালায় তা দেখে নিন।
গুগলে ও ইউটিউবে প্রচুর কনটেন্ট পাবেন একটু ধৈর্য নিয়ে ঘাটাঘাটি করুন এরপর মৌলিক কিছু বিষয় জেনে একটি অটো গাড়ি ভাড়া করে ড্রাইভারকে সাথে নিয়ে খোলা একটি মাঠে যান এবং ড্রাইভার মামাকে বসতে বলেন মাঠের এক কোনে আর আপনি নিজে নিজে চেষ্টা করুন যেগুলো শিখেছিলেন গুগল ও ইউটিউব করে সেগুলো প্রয়োগ করে। ধৈর্য নিয়ে একটু চেষ্টা করলেই দেখবেন আপনি চালাতে পারতেছেন। এভাবেই আপনি অটোগাড়ি চালানো শিখতে পারেন।
ড্রাইভিং ট্রেনিং গাইড : কিভাবে গাড়ি চালানো শেখা যায় – অটো গাড়ি চালানোর নিয়ম
১। অটো গাড়ি চালানোর জন্য প্রথমেই গাড়িতে বসে ভালোভাবে দেখুন গাড়িটা পার্কিং গিয়ারের আছে কিনা, তা নিশ্চিত হয়ে নিন। পার্কিং গিয়ার ও নিউটাল গিয়ার বলতে বোঝায় ফ্রি গিয়ারে রয়েছে মানে কোনো গিয়ার দেওয়া নেই। এরপরে আপনি গাড়ির ব্রেকে পা রেখে চাবি দিয়ে গাড়িটি স্টাট করুন। এবং ডান পাশের এক্সসেলেটর লিভারে হালকা চাপ দিন দেখবেন গাড়িটাতে খুবই চমৎকার একটা শব্দ করছে।
২। অটো গাড়ির মিটার বোর্ডের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখুন ইন্ডিকেটর লাইট, গাড়ির তাপমাত্রা, জ্বালানী ইত্যাদি ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সব জিনিস ঠিক আছে কিনা।
৩। এবার গাড়ির সামনে ও পেছনে তাকিয়ে দেখুন গাড়িটি সামনে যাওয়ার জন্য পরিমাণ মতো জায়গা আছে কিনা।
৪। এখন ভালোভাবে দেখুন গাড়িটির হ্যান্ড ব্রেক লক করা কিনা, লক করা থাকলে আনলক করে নিন।
৫। এখন ইংরেজী অক্ষরের ডি নাম্বারের গিয়ার দিন।
৬। এরপরে গাড়ির স্টিয়ারিংটি শক্ত করে ধরুন।
৭। এবার আপনি ডান পায়ে থাকা ব্রেকটি চাপ দেওয়া ছেড়ে দিন, আর বাম পা দিয়ে গাড়ির এক্সলেটর লিবারটিতে চাপ দিন আস্তে করে এবং গাড়িটি চলার মতো শক্তি তৈরি করুন চাপ দিয়ে। এরপর এক্সলেটরে যতবেশী চাপ দিবেন ততো বেশী গাড়ি দ্রুত গতি নিয়ে সামনে অগ্রসর হবে।
৮। এখন পিকআপ বা এক্সিলেটর চেপে ৬০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালাতে পারবেন। যদি এরচেয়েও দ্রুতগতিতে চালাতে চান তাহলে জিরো মোড অন করে যতো খুশী জোরে চালাতে পারবেন। তবে আমার সাজেশনে হলো যেহেতু আপনি নতুন গাড়ি চালানো শিখতেছেন তাই আপনি বেশী জোরে গাড়ি চালাবেন না, যতোটুকু গতি আপনি কন্ট্রোল করতে পারবেন ঠিক ততোটুকু গতি নিয়ে গাড়ি চালাবেন নাহলে বিপদের আশঙ্কা থাকবে।
৯। এবার কথা হলো গাড়ি থামাবেন কিভাবে? অনেকেরেই হয়তো থামানোর বিষয়টা বলতে হবেনা। মানে অনেক লোকই গাড়ি চালাতে না পারলেও গাড়িকে কিভাবে থামানো বা বন্ধ করতে তা জানা রয়েছে। গাড়ি থামানো খুবই সহজ এক্সেলেটর থেকে বাম পা সরিয়ে নিন এবং ডান পায়ের ব্রেকটি অস্তে অস্তে চেপে ধরুন। দেখবেন গাড়ি থেমে গেছে।
১০। অটো গাড়ি পেছেনে নিতে আপনি রিয়ার গিয়ার দিন এবং আগের মতো এক্সেলেটর চাপ দিয়ে দিয়ে পেছনে যাবেন।
১১। উচু স্হানে উঠার সময়ে এল ওয়ান ও এল টু গিয়ার দিয়ে উপরে উঠবেন।
একটা আর্টিকেল পড়ে কখনোই আপনি সুস্পষ্ট ভাবে অটো গাড়ি চালানো শিখতে পারবেননা। আপনার মধ্যে যদি চেষ্টা থাকে তাহলে শিখতে পারতে পারেন। তবুও উচিৎ এক্সপার্ট একজন ড্রাইভারের কাছ থেকে এ টু জেড হাতে কলমে শেখা। নতুন অবস্থায় কখনোই রাস্তায় অটো গাড়ি নিয়ে শিখতে যাবেননা, একটি খোলা বড় মাঠে গিয়ে তারপর অটোগাড়ি চালানো শিখুন এরপরে ভালোভাবে চালাতে পারলে আপনি রাস্তায় চালাতে পারেন। আর যদি প্রথমেই রাস্তায় এসে গাড়ি চালানো শিখতে যান তাহলে কিন্তু দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকবে।