মোটরসাইকেল চালানো পছন্দ করে না এমন লোক খুব কমই রয়েছে। মোটর সাইকেল চালানোর জন্য পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের একটু বেশী সতর্ক থাকতে হয়, নাহলে দূর্ঘটনা পড়ার বেশীই ঝুঁকি থাকে। তাই মোটরসাইকেল চালানোর পূর্বে কিছু টিপস মেনে চলা খুবই জরুরী।
মহিলাদের মোটরসাইকেল চালানোর জন্য ১০ টি টিপস জেনে নেওয়া যাক।
১। আরামদায়ক পোশাক পরিধানঃ
মোটরসাইকেল চালানোর সময়ে আপনাকে আরামদায়ক পোশাক পরিধান করতে হবে। আরামদায়ক পোশাক পরিধান করলে আপনার অনুভূতি অন্যান্য সময়ের অনুভূতির তুলনায় বেশী ভালো হবে। অনুভূতি ভালো থাকলে মোটরসাইকেল চালাতে আপনার ভালো লাগবে।
২। হালকা ব্যাগ বহনঃ
ভ্রমনে বের হওয়ার সময়ে সাথে বেশী ভারী ব্যাগ বা অপ্রয়োজনীয় ব্যাগ সাথে রাখবেন না। যতো কম ব্যাগ নিয়ে বাইক চালাবেন ততো ভালো স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। বাইক চালানোর ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ যদি না করেন তাহলে বেশী সময় বাইক চালাতে পারবেননা, নিজের ভিতরে একটা বিরুক্তবোধ ফিল করবেন।
৩। কাঙ্ক্ষিত জায়গা সম্পর্কে জানাঃ
আপনি যে জায়গায় ভ্রমন করতে যেতে চাচ্ছেন সেখানের সবকিছু সম্পর্কে জানতে না পারেন, সবকিছু সম্পর্কে যে আপনার জ্ঞান থাকবে তা নয়। আপনি যেখানে ভ্রমন করতে যেতে চাচ্ছেন সেখানে যাওয়ার জন্য কোন কোন রোড অনুসরণ করে যেতে হবে এবং সেখানের কোথায় কি ও কোথায় ঘুরাঘুরি করবেন তা সম্পর্কে আগেই ভালোভাবে জেনে নিবেন। জানার জন্য পরিচিত ভ্রমনপ্রিয় লোকদের কাছ থেকে সবকিছু জেনে নিতে পারেন অথবা হাতে থাকা স্মাটফোনটি দিয়ে গুগল করে ও গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে কিছুটা ধারনা নিতে পারেন। আপনার যদি গন্তব্যস্হল সম্পর্কে পুরো ধারনা থাকে তাহলে মোটরসাইকেল ভ্রমনটি এনজয় করতে পারবেন।
৪। সকালে রওয়ানা করুনঃ
আপনি যদি কোনো লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে ভ্রমন করতে চান তাহলে সেদিন খুব সকালে যাত্রা শুরু করুন। সকালবেলায় রাস্তায় যানবাহন এবং লোক কম থাকে সেই সাথে আপনার বাইকের ইন্জিনটিও খুব ঠান্ডা থাকে তাই এই সময়ে ট্রাফিক জ্যামে পড়তে হয়না তাই দ্রুতগতিতে চলা যায়। সকাল বেলায় গন্তব্য শুরু করলে অনেক লাভ রয়েছে, সকালবেলার আবহাওয়াটা খুবই ভালো থাকে দিনের অন্যান্য সময়ের তুলনায়।
আপনি যদি গন্তব্যস্থলটি খুব দূরে হয় তাহলে আপনি সকাল সকালেই মোটরসাইকেল নিয়ে রওয়ানা দিন, এতে আপনি সন্ধার পূর্বেই আপনার গন্তব্যস্থলে পৌছতে পারবেন। মেয়ে মানুষের সন্ধার পূর্বেই ঘরে বা বাসায় ফেরাই নিরাপদ, তাই লম্বা পথ হলে সকাল বেলাই রওয়ানা দেওয়া উত্তম।
৫। বিরতি নেওয়াঃ
একটানা ২-৩ ঘন্টা মোটরসাইকেল চালানোর পরে ক্লান্তি আসে তখন আর মোটরসাইকেল চালানোটা এনজয় থাকেনা। তাই কয়েকঘন্টা মোটরসাইকেল চালানোর পরে একটু চা বা কফি পান করে জিরিয়ে নিতে পারেন, এতে আপনার ক্লান্তিটা দূর হয়ে যাবে। এরফলে আবার আগের মতো মোটরসাইকেল চালাতে পারবেন।
৬। মোটরসাইকেল নির্বাচনঃ
বেশীরভাগ মেয়েরাই যে ভুলটি করে থাকে তা হলো সঠিক মোটরসাইকেল নির্বাচন। অনেকেই বাইক কেনার সময়ে চিন্তাভাবনা করে মোটরসাইকেল কিনে না, যারফলে বাইক নিয়ে ভ্রমনে বের হওয়ার পরে লোকের মুখে নানান বিদ্রুপ মুলক কথা বার্তা শুনতে পাওয়া যায়। এছাড়াও যে মোটরসাইকেলটি আপনি চালাবেন সেটিতে বসে বা চালানোর সময়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন তাহলে সেই মোটরসাইকেলটি নিয়ে ভ্রমনে বাহির হলে এনজয় করতে পারবেননা এবং মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করার সময়েও আপনার নিজের উপরে নিজের আত্নবিশ্বাসটা ও কম থাকবে এরফলে বাইকটি নিয়ে দূর্ঘটনায় পড়তে পারেন।
৭। দক্ষতা বাড়ানোঃ
আপনি যদি অল্প অল্প মোটরসাইকেল চালাতে পারেন তাহলে এই দক্ষতা নিয়ে ভ্রমনে বের হলে বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন, তাই আপনাকে মোটরসাইকেল চালানো ট্রেনিং নিতে হবে। মোটরসাইকেল চালানোর জন্য দক্ষতা অর্জনের জন্য আপনি অনলাইনে মোটরসাইকেল চালানোর কোর্স করতে পারেন। বা পরিচিত দক্ষ একজন মোটরসাইকেল চালকের সাহায্য নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারেন।
৮। রাস্তাঃ
আপনি যদি কোনো স্হানে ভ্রমন করতে যেতে চান তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে সেই জায়গায় যাওয়ার জন্য কোন রাস্তা অনুসরন গেলে তাড়াতাড়ি ও নিরাপদে যেতে পারবেন বলে মনে হবে এমন রাস্তা আগেই নির্বাচন করে রাখবেন, এতে আপনার যাত্রা সহজ হবে ও এনজয়ের সাথে হবে।
৯। সবসময় ভালো চিন্তাঃ
মোটরসাইকেল নিয়ে ভ্রমনের পূর্বেই ভালো চিন্তানামক সফটওয়্যারটি আপনার মাথায় ইনস্টল করে নিন, এতে আপনি যখন বাইক নিয়ে রাস্তায় বের হবেন গন্তব্যস্থলে পৌছানোর জন্য তখন কোনো বাজে পোলাপান আপনাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা মুলক কথা বার্তা বললে ভালো চিন্তানামক সফটওয়্যার টি কম্পিউটারটারের এন্টিভাইরাসের মতো কাজ করবে যাতে বাজে কথা গুলো আপনার মাথায় না ঢুকে সেই এলার্ট দিবে। যারফলে কখনো নিজের উপর থেকে আত্নবিশ্বাসটা চলে যাবেনা এতে আপনি বিনা বাধায়ই আপনার উদ্দেশ্যে পৌছাতে সক্ষম হবেন।
১০। সাধারন সমস্যাগুলো সমাধান করা জানাঃ
আপনি আপনার মোটরসাইকেলটি নিয়ে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে অবশ্যই সবকিছু ঠিকআছে কিনা তাতো চেক করে নিবেনই তার সাথে প্রয়োজনীয় কিছু যন্ত্রপাতি ও সাথে রাখবেন যাতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে মোটরসাইকেলের কোনো সমস্যা হলে সেটি সমাধান করতে পারেন। এর জন্য নিজের টুকিটাকি জ্ঞান ও রাখতে হবে সমস্যা গুলো সমাধানের জন্য। এছাড়াও ভ্রমনকারীদের সবাই ই হেল্প করে তাই যেকোনো সমস্যায় হেল্প পেতে পারেন পথচারীদের থেকে।