বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় চলাচলে যেমন কষ্ট সাধারণ জনগনের তেমনি বাইক রাইডিং করাও কষ্টকর। স্বাভাবিক ওয়েদারে বাইক রাইডিং ও বৃষ্টির সময়ে বাইক রাইডিং এর মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে। স্বাভিবিক আবহাওয়ায় বাইক চালানোর সময়ে যতটো সতর্কতা থাকতে হয় তার চেয়েও বেশী সতর্কতায় বাইক রাইডিং করতে হয় বৃষ্টির সময়ে। বৃষ্টিতে বাইক রাইডিং করতে হলে সবসময় সতর্কতা শব্দটি মাথায় রাখতে হবে। কথায় বলে সতর্কতার মার নেই। তো বন্ধুরা, আজকে আমরা আপনাদের সেরা কিছু বৃষ্টিতে মোটরসাইকেল চালানোর টিপস দেব।
একজন বাইক রাইডার যদি একটু ভেবে চিন্তে নিজ বুদ্ধি খাটিয়ে এবং আরো কিছু নিয়ম কানুন মেনে বাইক রাইডিং করলে ছোট বড় এক্সিডেন্ট থেকে নিজে ও পেসেঞ্জার সহ রক্ষা পেতে পারেন। বৃষ্টির সময়ে রাস্তা পিচ্ছিল ও কর্দমাক্ত হয়ে ওঠে এবং সেই সাথে বাইকের মধ্যে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে বাইকের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়না। এরফলে দুর্ঘটনা ঘটে, বৃষ্টিতে বাইক রাইডিং করার সময়ে দূর্ঘটনা এড়িয়ে চলতে কিছু কৌশল অবলম্বন করে বাইক রাইডিং করা খুবই জরুরী।
বৃষ্টিতে মোটরসাইকেল চালানোর সময় মৌলিক কিছু বিষয়ে সচেতনতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:
১। প্রি রাইড চেক:
বাইক নিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার পূর্বে বাইকের সবকিছু ঠিক আছে কিনা তা একবার চেক করে নিবেন, যেমন বাইকের ব্রেক ঠিকমতো কাজ করছে কিনা, বাইকের হেড লাইট জ্বলে কিনা, ইন্ডিকেটর লাইট ঠিক আছে কিনা, বাইকের চাকায় পর্যাপ্ত বাতাস আছে কিনা ইত্যাদি। চাইলে বাইকের চাকার প্রেসার বা হাওয়া একটু কমিয়ে নিতে পারেন এতে ভালো গ্রিপ পাওয়া যায়।
২। সঠিক গিয়ার নির্বাচন
বৃষ্টিতে বাইক চালানোর জন্য মোটামুটি ভালোমানের একটি রেইনকোট প্রয়োজন যেটা বাইক রাইডারকে ১-১.৫ ঘন্টা প্রচুর বৃষ্টি থেকে শুকনো রাখতে পারবে এমন একটি রেইনকোট সিলেক্ট করতে হবে। এবং হেলমেট, গ্লাভস ও বুট জুতা হলে বেশী ভালো হয়। আসল কথা হলো আপনার শরীরে যেন কোথাও পানি স্পর্শ করতে না পারে।
৩। তাড়াহুড়া পরিহার করুন
মনে করুন আপনি বাইক চালাচ্ছেন তখন হঠাৎ শুরু হলো মুষল ধারে বৃষ্টি। আপনার সাথে রেইনকোট নেই ছাতা নেই। এমনকি কাছাকাছি আশ্রয় নেয়ার মতো কোনো জায়গাও নেই। তাই চিন্তা করলেন বৃষ্টি থেকে বাচতে হলে আপনাকে আরো সামনে দ্রুতগতিতে যেতে হবে তাহলেই আশ্রয়স্হল পাওয়া যাবে।
এমন চিন্তা শুধু আপনিই করেননি বরং রাস্তায় থাকা লোকজন এবং যানবাহনের সব ড্রাইভারা ই একই চিন্তা করে এবং তারাও দ্রুতগতিতে চলতে শুরু করে। এর ফলে তাড়া হুড়ার কারনে দূর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায়।
৪। অন্যান্য গাড়ি থেকে দূরত্ব বেশী রাখুন
স্বাভাবিক ওয়েদারে গাড়ি চালানোর সময়ে যেভাবে ব্রেক করে গাড়িকে কন্ট্রোল করা যায় কিন্তু বৃষ্টির সময়ে রাস্তা পিচ্ছেল ও কর্দমাক্ত থাকায় গাড়ির ব্রেক কম কাজ করে। এছাড়াও বৃষ্টির সময়ে হেলমেট পরিধান করা থাকলে বৃষ্টির পানি হেলমেটের গ্লাসে পড়ার কারনে সামনে স্পষ্ট দেখা যায় না। তাই বৃষ্টির সময়ে অন্যান্য গাড়ি থেকে দূরত্ব বজায় রেখে বাইক রাইডিং করা উচিত।
৫। রাস্তায় বেশী পানি
বৃষ্টির সময়ে অনেক জায়গার রাস্তায়ই পানি জমে যায়, আর বেশী পানি জমিয়ে থাকার কারনে রাস্তা ভাল করে বোঝা যায় না কোন খানে খাদ আর কোন জায়গাটা বেশী ভালো। রাস্তার খাদ বা গর্ত না দেখে বাইক রাইডিং করাটা বিপদজনক। তাই একটু বুদ্ধি খাটিয়ে সামনের বড় গাড়ি বা রিকশাকে অনুসরণ করে ধীরে ধীরে অগ্রসর হলে হলে দূর্ঘটনা থেকে এড়ানো যায়।
৬। গিয়ার গুলো শুকিয়ে নিন
বৃষ্টির মধ্যে বাইক রাইডিং সম্পুর্ন করার পরে গ্লাভস, বুট জুতা, হেলমেট, রেইনকোট ইত্যাদি ইত্যাদি খুলে এমন জাগায় রাখুন যাতে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় যাতে পরে বাইক রাইডিংয়ের সময় শুকনো পান।
৭। বাইক ওয়াশ
বৃষ্টির মধ্যে বাইক চালানোর ফলে রোডের কর্দমাক্ত কাদা গাড়ির গায়ে লেগে থাকে, এর ফলে এ কাদা না পরিষ্কার করলে বাইকের গায়ে কাদার দাগ পড়ে যাবে। তাই বাইকটিকে পুরো ওয়াশ করতে না পারলেও; সামান্য পানি ঢেলে বাইকটিকে পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়াও বাইকের অনেক চিপা জায়গা রয়েছে যেখানে কাদা শুকিয়ে গেলে পরে আর পরিষ্কার করা যায় না।