বাংলাদেশের সব ধরনের মােটরগাড়ির চালককে কিছু বিশেষ নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। শুধু মােটরগাড়ি নয়- সেইসাথে যন্ত্রচালিত সকলপ্রকার যানবাহন চালনার কিছু সরকারি নীতিমালা রয়েছে। এসব রুলস মেনে চলে তারপরই রাস্তায় নাম উচিৎ।
ড্রাইভারকে সেইসব নিয়ম সঠিকভাবে মেনে চলার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে সেগুলাে নিয়ে আলােচনা করা হয়েছে।
বাইক ও মােটরগাড়ি চালনার কয়েকটি বিশেষ নিয়মকানুনঃ
- ১। গাড়ির হর্ণ, ব্রেক, গিয়ার ও স্টিয়ারিং ঠিক থাকা চাই। তা না হলে গাড়ি বের করা চলবে না।
- ২। রাতের বেলা গাড়ি চালাতে গেলে গাড়ির আলাে ঠিকমতাে থাকা চাই।
- ৩। সূর্য অস্ত যাবার আধ ঘণ্টা পর থেকে ও ভাের হবার আধঘণ্টা আগে পর্যন্ত গাড়ির বাতি জ্বালিয়ে রাখতে হবে।
- ৪। যে গাড়ি যতটা মাল বহন করার উপযােগী ঠিক ততটা মালই নিতে পারবে- তার বেশি বা কম নেওয়া চলবে না। তাহলে তা আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ ।
- ৫। সবসময় গাড়ি পথের বামদিক দিয়ে চলবে; যদি পথ ক্রস করতে হয় তবে সিগন্যাল দিতে হবে ।
- ৬। যেখানে যতটা স্পিডে গাড়ি চালাবার নির্দেশ আছে, সেই গতিতেই গাড়ি চালাতে হবে। যেমন হয়তাে সিগন্যাল আছে 20 M.PH.- সেখানে ২০ মাইলের বেশি গতি কদাচ হবে না।
- ৭। যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করা উচিত নয়। আইন হলাে, আঘাতপ্রাপ্ত লােককে গাড়িতে তুলে নিকটবর্তী ডাক্তারখানা বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। নিকটবর্তী থানাতে দুর্ঘটনার কথা জানিয়ে দিতে হবে। এরূপ করলে ড্রাইভারের শাস্তি কম হয় বা হয় না। কিন্তু পালিয়ে গেলে শাস্তি বেশি হয়।
- ৮। পার্বত্য এলাকায় কখনাে খারাপ বা অসুবিধাযুক্ত গাড়ি চালানাের নিয়ম নেই।
যদি বিশেষ প্রয়ােজন হয়, নিকটবর্তী থানা থেকে অনুমতি নিতে হবে। - ৯। কোনও রকম নেশার দ্রব্য গাড়িতে রাখা কদাচ কর্তব্য নয়। তা বে-আইনী। ধরা পড়লে শাস্তি হবে।
- ১০। যে জায়গার লাইসেন্স সেখানেই গাড়ি চালাতে হবে। যদি অন্য জায়গায় যেতে হয় তবে অনুমতি নিতে হবে। পুলিশ অফিসারের অনুমতি ছাড়া তা করা যায় না।
- ১১। গাড়িটি যদি বাস হয়, তাহলে আরােহীর সুযােগ-সুবিধা দেখতে হবে। যদি ঝগড়া-বিবাদ হয়, তাহলে আপােষে তার মীমাংসা করার চেষ্টা করতে হবে। যদি গাড়ির কোনও আরােহী পার্শ্ববর্তী কোনও নারীর সঙ্গে কুব্যবহার করে, তৎক্ষণাৎ তা থানায় জানিয়ে দিতে হবে ও পুলিশের সাহায্য নিতে হবে।
- ১২। ড্রাইভারের পাশে মাত্র একজন সহকারী বা আরােহী বসার নিয়ম আছে। তার বেশি ড্রাইভারের পাশে বসানাে উচিত নয়।
- ১৩। গাড়ি চালাতে হলে, দিনের বেলা হাতের সংকেত ও রাতের বেলা আলাের সংকেত ঠিকমতাে করতে হবে। তাতে ভুল হলে তা আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ ।
- ১৪। অযথা রাস্তার মাঝে গাড়ি দাঁড় করিয়ে অন্যের অসুবিধা করা চলবে না।
- ১৫। বাসে কোনও জিনিস এমনভাবে রাখা চলবে না, যা অন্যদের বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
- ১৬। যদি পথে গাড়িতে ধাক্কা খেয়ে তােক বা কোনও পশু পড়ে যায়, তাহলে গাড়ি সঙ্গে সঙ্গে দাঁড় করাতে হবে। যদি বেশি চোট না লাগে, তাহলে ড্রাইভারকে তার নম্বর ট্রাফিক পুলিশকে দিতে হবে এবং যার ধাক্কা লেগেছে তার ঠিকানা নিতে হবে।
- ১৭। যদি পথে কোনও জন্তু হঠাৎ চমকে যায় বা ইতস্ততঃ করে তাহলে গাড়ি থামাতে হবে।
- ১৮। পুলিশের কোনও লােক (পােশাকসহ) যদি পথে কোনও সময় গাড়ি থামাতে বলে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থামাতে হবে।
- ১৯। যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে বা নিয়মের গােলমাল হয় এবং পুলিশ নম্বর অনুযায়ী চিঠি লিখে সব কথা জানাতে চায় বা হাজির হতে বলে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তা পালন করতে হবে।
- ২০। যদি থানা বা কোর্ট থেকে কোনও বিবরণ চায়, তাহলে অবশ্যই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই বিবরণ পৌছে দিতে হবে।
আশাকরি বাইক চালানোর এসব নিয়ম জেনে রাস্তায় নামবেন এবং গাড়ি চালানোর নিয়মাবলী সঠিকভাবে মেনে চলবেন।