এই পোস্টে Hero Extreme 160R ওরফে Thriller 160R এর টেস্ট রাইড রিভিউ ও BD Price নিয়ে আলোচনা করা হবে। ইন্ডিয়ার/ ভারতের কিছু টপ রিভিউয়ার এর মন্তব্য দেখলাম বা রিভিউ দেখলাম, সবাই বাইকটাকে মোটামুটি ভালই বলল, সুতরাং সামনাসামনি দেখে অথবা চালানোর পরে আপনার ব্যাকুল মন্তব্যগুলো না হয় প্রকাশ করলেন। এটা বাংলাদেশের একটি গেম চেঞ্জার নামে উপস্থাপন হতে যাচ্ছে। যেখানে পাচ্ছেন ডাবল ডিস্ক, সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস, এফ আই ইঞ্জিন, পেছনে 130 সেগমেন্টের টায়ার, মাসকুলার বডি অথচ ওয়েট ডিসট্রিবিউশন খুবই সুন্দর, মাত্র 138 কেজি ওয়েট, এই সবকিছুই পাচ্ছেন মাত্র (ডাবল ডিস্ক এর ক্ষেত্রে হয়তো ১৯৮০০০) আর (সিঙ্গেল ডিস্কে হয়তো ১৮৮০০০±)। সুতরাং এটি 160cc সেগমেন্টের সবচাইতে কম দামি ও সেরা ১টি বাইক হতে যাচ্ছে। এজন্য Hero Bangladesh কে ধন্যবাদ!
Hero Extreme 160R specification and Price in BD:
Brand Model: |
Hero Xtream 160R |
Engine: |
4 Cylinder/2359 cc |
Type: |
Standard Bike |
Price (SD): |
1,90,000 tk |
Price (DD): |
2,00,000 tk |
Status: |
Available in Bangladesh |
Post Type: | Price in BD and Review |
Last Update: | 24 December, 2020 |
Engine and Transmission info:
Engine Type: Air cooled, 4 Stroke 2 Valve Single cylinder OHC
Displacement: 163 cc
Max Power: 15.2 PS @ 8000 rpm
Max Torque: 14 Nm @ 6500 rpm
No. of Cylinders: 1
Cooling System : Air Cooled
Valve Per Cylinder: 2
Drive Type: Chain Drive
Starting: Kick and Self Start
Fuel Supply: Fuel Injection
Clutch: Multi Plate Wet Clutch
Transmission: Manual
Emission Type: bs6
প্রথমেই বলে নেই, ০ কিলো চলা একটা ব্র্যান্ড নিউ বাইককে ৩ কিলো চালিয়ে ভালো-মন্দ জাজ করা সম্ভব না।
আমি শুধু আমার টেস্ট রাইডের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।
আমার সাথে আপনার অভিজ্ঞতা নাও মিলতে পারে,এ জন্য কমেন্টে বংশপরিচয় দিবেন না।।
আমি কোন স্পেশিফিকেশন নিয়ে আলোচনা করবো না।
গুগল করলে বা হিরোর ওয়েবসাইটে যেটা ভুরি-ভুরি পাওয়া যায় সেটা কস্ট করে লেখার দরকার কি??
আশা করছি যারা বাইকটা কেনার চিন্তাভাবনা করছেন বা কিনবেন তাদের জন্য অনেক উপকারী হবে এই পোস্ট।
মূল লেখা শুরু করার আগে আরেকটা কথা বলি,এই বাইকটা তার লুকের কারনে অনেক ট্রলের শিকার হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সব শেষে আলোচনা করবো।
মূল লেখায় আসি।
hero xtreme 160r review
বিল্ড কোয়ালিটিঃ এভারেজ।
হিরোর অন্যান্য বাইকের মতোই।
খুবই শক্ত-পোক্ত মনে হয়নি আবার ফেলে দেয়ার মতোও না।
প্রাইস অনুযায়ী ঠিক আছে।
সুইচ কোয়ালিটিও এভারেজ।
অন্তত হাংক থেকে কিছুটা ভালো মনে হয়েছে সুইচগুলো।
ইঞ্জিন ভাইব্রেশন এবং সাউন্ডঃ সাউন্ড হাংক এর মতো স্মুথ না তবে ভালোই স্মুথ।
আবার ০ কিমি চলা একটা বাইকে ভাইব্রেশন ছিলো না বললেই চলে!!
ব্যাপারটা আমাকে বেশ অবাক করেছে।
মনে হচ্ছিলো যে স্টক প্লাগ খুলে লেজার ইরিডিয়াম লাগানো আছে!!
এফ.আই ইঞ্জিনের সাউন্ড একটু রাশ হয়।তবে এটা এফজি এফ.আই এর মতো এতোটা রাশ নয়।
যারা স্মুথ সাউন্ড পছন্দ করেন তাদের ভালো লাগবে।।
মিটার প্যানেলঃ আমার কাছে ভালো লেগেছে,বিশেষ করে কালারটা।
4v এর মতো যদি মোবাইলের সাথে কানেক্ট করার জন্য ব্লুটুথ দিতো তাহলে অনেক ভালো হতো ব্যাপারটা।
তবে প্লাস পয়েন্ট হলো স্টক হ্যাজার্ড ইন্ডিকেটর সুইচ।
আলাদা করে হ্যাজার্ড করার প্রয়োজন হবে না।
ইঞ্জিন কিল সুইচ আর সেল্ফ স্টার্ট সুইচ একটাই।মানে কিল সুইচ অন করার পরেও নীচে কিছুটা স্পেস থাকে,ওইটা প্রেস করলেই বাইক স্টার্ট হবে।
ভালোই লেগেছে সিস্টেমটা।
গিয়ার: এক্কেবারে নতুন বাইক হিসেবে গিয়ার যথেস্ট স্মুথ।
গিয়ার যে আরো স্মুথ হবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
গিয়ার চেঞ্জ এর সময় হাংক এর মতো “কট-কট” শব্দটা নেই।
সাস্পেনশনঃ এতোটা সফট আশা করি নি।
ইচ্ছা করেই খুবই খারাপ একটা রাস্তাই যাই সাস্পেনশন আর এবিএস টেস্ট করার জন্য।
আমি এফজি রাইডার;আরামদায়ক রাইডে আমি অভ্যস্ত।
এতো সফট সাস্পেনশন রাইডে আরামদায়ক অনূভুতি দিলেও এক্সট্রিম রাইডারদের হাই স্পীড কর্ণারিংয়ে কোন প্রকার সমস্যা সৃস্টি করবে কিনা সেটা সময়ই বলে দিবে।
হিসেব মতে সাস্পেনশন কিছুটা সফট হয় নতুন একট বাইক কিছুদিন চালালে।
এবিএসঃ টেস্ট রাইডের বাইকটা আমিই প্রথম রাইড দিই।
এটা ছিল সিংগেল চ্যানেল এবিএস ডুয়েল ডিস্ক।
আগেই বললাম যে সাস্পেনশন আর এবিএস টেস্ট করার জন্য খুবই খারাপ একটা রাস্তায় ঢুকে পড়েছিলাম।
রাস্তার পাথর উঠে গর্ত হয়ে ছিলো আর কিছু কিছু জায়গায় পানি জমে ছিলো।
ইচ্ছা করেই ৬০ স্পীডে ওসব জায়গায় হার্ড ব্রেক করি এবিএস টেস্ট করার জন্য।
এবিএস রেসপন্স মোটামুটি ভালোই ছিলো।
এফজি ভি থ্রীর মতো যদিও না কিন্তু এই বাজেটে ফেলে দিতেও পারবেন না।
কিছুদিন পর এবিএস রেসপনন্সে কিছুটা পরিবর্তন আসবে কিনা এইটা আমার সঠিক জানা নেই।
সিটিং পজিশন এবং হ্যান্ডেলবারঃ হ্যান্ডেলবার টাকে আমার কাছে পুরাই 4v এর কপি মনে হয়েছে। একটু ওয়াইড শেপের।
সিটিং পজিশন এফজির মতো কম্ফোর্টেবল মনে না হলেও কাছাকাছি টাইপ।
সিটিং পজিশন অনেকটা বাজাজ NS এর মতো মনে হয়েছে।
৫ফুট ৫/৬ ইঞ্চির নীচের রাইডাররা একটু প্রবলেমে পড়বে বলে মনে হলো।
থ্রটল রেসপন্সঃ ০ কিমি চলা বাইকে আসলে থ্রটল রেসপন্স জাজ করাটা একটু কঠিন।ব্রেক ইন পার হলে ঠিকমতো বোঝা যাবে।
তবে আরেকটু ভালো আশা করেছিলাম।
কালার ফিনিশিংঃ শোরুমে ৩ টা কালার দেখলাম।
এর মধ্যে সাদাটা বাদে অন্য দুইটার কালার ফিনিশিং এক্কেবারে বাজে মনে হয়েছে।
হিরোর উচিৎ ছিলো এ ব্যাপারে নজর দেয়া।
যা হোক এবার এর লুক নিয়ে কিছু কথা বলি।
ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে এর লুক এক্কেবারে ফালতু লেগেছে।
শুধু আমি কেন আমার মনে যে ৯০%বাইকারের কাছেই এটাই মনে হবে।
হিরো তো উপমহাদেশ ওয়াইজ ব্যাবসা করে কিন্তু উপমহাদেশে তাদের “মার্কেট রিসার্চ ” বলে কিছু আছে বলে মনে হয় না।
নাহলে ২০২১ সালে এসেও এই লুকের বাইক কিভাবে তারা প্রোডাকশন করে??
একমাত্র লুকের কারনে বাইকটা পুরাই পিছিয়ে গেছে।
সামনে থেকে আর সাইড থেকে দেখে পুরাই নিম্নমানের চাইনিজ বাইক বলে মনে হচ্ছে।
লুকটা অবশ্য “হুজ হুজ-হিজ হিজ” একটা ব্যাপার।
কারো কারো হয়তো কাছে ভালো লাগতেও পারে এই লুক।
ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে মনে হয়েছে যে,যদি কেউ এর লুকটা কম্প্রোমাইজ করতে পারে তাহলে ২ লাখের মধ্যে রিফাইন্ড এফ.আই ইঞ্জিন,সিংগেল চ্যানেল এবিএস,১৩০ সেকশন ওয়াইড টায়ার সহ কমপ্লিট একটা প্যাকেজ পাবে।
বাদবাকি সবকিছুই ঠিক রেখে হিরো যদি এর ডিজাইনের ব্যাপারটাতে একটু রিসার্চ করতো বিশেষ করে উপমাহাদেশের ইয়াং জেনারেশনের পছন্দ-অপছন্দের দিকটা দেখতো তাহলে হলফ করে বলা যায় যে এটাই হতো এই সেগমেন্টে হিরোর “রিয়েল গেম চেঞ্জার” বাইক।